জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা।
রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচীর অংশবিশেষ কুমিল্লা মহানগরীর পুবালী চত্তরে ২৪আগষ্ট রোজ শনিবার সকাল ১১টায় মানববন্ধন করে সুজন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন)এর কুমিল্লার সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মহানগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আজাদ সরকার,উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান টিটু, মোহাম্মদ ওমর ফারুক (মহানগর সাধারণ সম্পাদক), মোঃ তৌহিদ হোসেন সরকার,(১৭নংওয়ার্ড সভাপতি) সাহানা আক্তার (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক), আব্দুল হান্নান (মহানগর ), এডভোকেট ইসলাম ইবনে সাইখ (সভাপতি সুজন সদর দক্ষিণ), আবু বক্কর সিদ্দিক ভূইয়া (মহানগর সুজন), সৈয়দ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন (আঞ্চলিক সমন্বয়কারী), এবং মো মীর মারুফ তাসিন প্রমুখ।
বক্তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতার সফলতা কামনা করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, রাস্ট সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
দীর্ঘ বছরের কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী শাসনের ধংসপ্রায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পূনরোদ্ধারেরও আহবান জানান।
‘‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সৃষ্টগণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে পনেরো বছরের কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটেছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুধু একটি সরকারের পরিবর্তন চায়নি, চেয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন।
আমরা সুজন-এর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন থেকে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আমরা গত ১১ আগস্ট ২০২৪-এ একটি সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে রাষ্ট্রে সংস্কারের দাবি তুলে ধরেছি। আজকে আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দাবিতে সারাদেশে আওয়াজ তুলেছি।
আজকের এই মানববন্ধন থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহবান। হত্যা, সহিংসতা, লুটপাট ইত্যাদিতে জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করুন। হত্যা ও সহিংসতায় জড়িতদের দ্রুততার সাথে বিচারের আওতায় আনুন। আন্দোলনে নিহতদের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে সহায়তা করুন ও ক্ষতিপুরণ দিন। আহতদের সুচিকিৎসাসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে, বিচারের আওতায় আনুন। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলো। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করো। পরমত সহিষ্ণুতার বার্তা ও বৈচিত্র্যতার মাঝে ঐক্যের চেতনা ছড়িয়ে দাও। অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্যের সংবিধান চাই। সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক ঐক্যমত্যই সংবিধানের গণতান্ত্রিক চেতনা পরিপন্থী ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার করো এবং প্রধানমন্ত্রী পদের টার্ম লিমিটি নির্ধারণ করন। জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকল সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণমুক্ত করো। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন চাই। ‘না-ভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন করো। নির্দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চাই স্থানীয় সরকারের কর্মকাণ্ডে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ করো, সংরক্ষিত নারী আসন এক-তৃতীয়াশে উন্নীত করো এবং প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করো। ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করো। সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট-এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিলসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। ‘ সৎ, যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করো। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির যথাযথ বাস্তবায়ন চাই এবং বিশেষ ট্রাইবুনালে দুর্নীতিবাজদের বিচার চাই। তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করো। গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকার বন্ধ করো। একটি শোষণহীন মানবিক রাস্ট চাই সংঘাত নয় ঐকোর বাংলাদেশ চাই। রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের অবসান ও আদর্শভিত্তিক জনকল্যাণমুখী রাজনীতি চাই। সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক ’’