সমতট ডেস্ক ।। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরেই প্যারাসিটামল একটি পরিচিত নাম। জ্বর, মাথাব্যথা, কিংবা শরীরের কোনো ব্যথা—এই ছোট্ট ট্যাবলেটটি সবকিছুর সমাধান হিসেবে বিবেচিত। নিরাপদ এবং কার্যকরী হওয়ায় এটি সবারই ওষুধের বাক্সে থাকে। তবে, এই ওষুধের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের এক প্রতিবেদন বলছে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল গ্রহণ করলে তা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই, চলুন জেনে নিই প্যারাসিটামল ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম:
১. কখন খাবেন প্যারাসিটামল: বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের তাপমাত্রা ১০১°F না হলে ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। এই ধরনের জ্বর সাধারণত ভাইরাল ফিভার হিসেবে পরিচিত এবং এটি নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে তাপমাত্রা ১০১°F এর ওপরে গেলে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে।
২. বিভিন্ন ব্যথার জন্য কার্যকরী: প্যারাসিটামল শুধু জ্বরের জন্যই নয়, এটি শরীরের ব্যথা, মাথাব্যথা, এমনকি পিরিয়ডের ব্যথার জন্যও কার্যকরী। তবে, দিনে ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি কখনোই দুবারের বেশি খেতে যাবেন না।
৩. দৈনিক সীমা: চিকিৎসকরা দিনে সর্বোচ্চ তিন থেকে চারটি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, ২৪ ঘণ্টায় এর বেশি প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে না।
৪. শিশুদের জন্য: শিশুদের বয়স অনুযায়ী, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল দিতে হবে।
৫. গর্ভাবস্থায়: সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খাওয়া হলে তা সন্তানের মধ্যে ADHD বা ASD এর মতো মারাত্মক স্নায়ুরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৬. সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ব্যবহার: ব্যথা বা জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল তিন দিনের বেশি খাওয়া উচিত নয়। তিন দিনের পরেও সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৭. সম্ভাব্য ঝুঁকি: গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খাওয়ার অভ্যাস কিডনি এবং লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
প্যারাসিটামল হয়তো জ্বর এবং ব্যথার সময়ে আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী, তবে ওষুধের মতো এটি ব্যবহারেও সতর্ক থাকা জরুরি। পরের বার প্যারাসিটামল খাওয়ার আগে এই নিয়মগুলো মনে রাখুন এবং সঠিকভাবে এর ব্যবহার নিশ্চিত করুন।