তৌহিদ হোসেন সরকার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবু তাহের মোহাম্মদ মাছুম বলেছেন, দেশে জামায়াতকে গণজাগরণ তৈরি করতে হবে। ঘরে-বাইরে ইসলামী জাগরণের জন্য তৎপরতা চালাতে হবে এবং প্রতিটি ঘরে জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। তিনি বলেন, “দেশের মানুষ এখনো জামায়াতকে পরীক্ষা করেনি, কিন্তু জনগণের মনে জামায়াতের প্রতি আস্থা তৈরি হয়েছে।” সামনে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেতাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। জামায়াত নেতাদের আমল, সততা, বিচক্ষণতা ও আমানতদারির মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে জামায়াতের সর্বশক্তি নিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এই নির্বাচন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে। সব দল সর্বশক্তি দিয়ে অংশগ্রহণ করবে, তাই জামায়াতকেও শক্তি ও সাহস নিয়ে কাজ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্টের সংস্কারের বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। সর্বত্র সংস্কার আনতে হবে। আমরা ৪১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি, যার মধ্যে নির্বাচনের আগে ১১টি এবং নির্বাচিত সরকার ৩০টি বাস্তবায়ন করবে। যদি এসব সংস্কার না হয়, তবে আমাদের আন্দোলন চলবে।” ‘বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন’ সমাবেশ শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও ইউনিট দায়িত্বশীলদের ‘বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন’ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন মাওলানা আবু তাহের মোহাম্মদ মাছুম। কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবুল হাসানাত মো. আব্দুল হালিম এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও নোয়াখালী জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আলাউদ্দিন। মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমানের উপস্থাপনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মুসলেহ উদ্দিন এবং সহকারী সেক্রেটারি কামরুজ্জামান সোহেল। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আবুল হাসানাত মো. আব্দুল হালিম বলেন: ১. নারী-পুরুষ সম্মিলিত গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে। 2. তৃণমূল পর্যায়ে দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। 3. পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। 4. দায়িত্বশীলদের প্রচলিত নেতাদের ঊর্ধ্বে উঠে আসতে হবে। 5. জনশক্তির মাঝে ‘ইনফাক ফিসাবিলিল্লাহ’ চেতনা তৈরি করতে হবে। 6. সেবা ও সাহায্যের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। 7. রাষ্ট্রীয় সংস্কারের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে। 8. ছাত্র, শ্রমিক ও অন্যান্য সংগঠনকে আরও সহযোগিতা করতে হবে। 9. মিডিয়া ও প্রচার কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। জামায়াতের করণীয়: পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকতে হবে। ঘরে ঘরে ও জনে জনে দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। ইউনিটের কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। নতুন নতুন এলাকায় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সংগঠনের কার্যক্রম বিস্তৃত করতে হবে। সংগঠনের দক্ষ পরিচালনা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মী গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের জনগণ জামায়াতের প্রতি আস্থা রাখছে, তাই ভবিষ্যতে দলটি জনগণের জন্য নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।