সমতট ডেক্স : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসের অফিস-সহায়ক আয়েশা আক্তার ৭ বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এরপরও নিয়মিত বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পারভীন আক্তার নামে এক নারীকে নামমাত্র মজুরি দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি। তার এই কাজে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা নিজেই।
এ ঘটনায় উপজেলার অফিসপাড়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদরের ভবানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আয়েশা আক্তার ১৯৯৫ সালের ২২ অক্টোবর শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে অফিস সহায়ক পদে যোগদান করেন। ২০১২ সালে একই পদে তিনি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বদলি হয়ে আসেন।
২০১৭ সালে শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে উপজেলার চরফলকন এলাকার পারভীন আক্তারকে নামমাত্র মজুরিতে তার পদে নিয়োগ করেন আয়েশা। ডিউটি না করেই মাস শেষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন তোলেন তিনি। তার বেতন সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। এ কাজ জেলা ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই করা হচ্ছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
অনেকেই অভিযোগ করেছেন, বছরের পর বছর এভাবে ডিউটি না করে বেতন উত্তোলন করার পেছনে কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে যে মানবিকতার কথা বলা হচ্ছে, এতে অনৈতিক অর্থনৈতিক সংযোগও থাকতে পারে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে পারভিন আক্তার বলেন, আমাকে মাসিক ৫ হাজার টাকা চুক্তিতে এ পদে দায়িত্ব দিয়েছেন আয়েশা আক্তার। তিনি মাসে দু-একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন তুলে নিয়ে যান।
কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে আয়েশা আক্তার বলেন, অসুস্থতার কারণে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেই পারভীনকে নিজ অর্থায়নে আমার পদে দায়িত্ব দিয়েছি।
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আজমল হোসাইন বলেন, আমি এখানে যোগদানের আগেই আয়েশা আক্তারের পরিবর্তে পারভীন দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৭ সালে তৎকালীন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম পাঠান লক্ষ্মীপুর জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই অনিয়মটি করেছেন। এ বিষয়ে জেলা কর্মকর্তাকে একাধিকবার জানানো হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তবে সফিকুল ইসলাম পাঠান অন্যত্র বদলি হওয়ায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
লক্ষ্মীপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দীন আহমদ খান বলেন, আমাকে কেউ বিষয়টি জানায়নি। আমি পরিদর্শনে গিয়ে তাকে দেখতে পাই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আয়েশা বলেছেন বিষয়টি আপনি জানেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এ কথা সত্য নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, প্রত্যেক অফিসের জনবল সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিজস্ব ব্যাপার। বিষয়টি আমি এই প্রথম জেনেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।