সমতট ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলামের নির্দেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে খিচুড়ি ভোজকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে হট্টগোল দেখা দিয়েছে। এ সময় কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনকে কুবি ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ। শুক্রবার রাত ৮ টায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ভারতীয়র আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজের আয়োজন করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে। এই আয়োজনের জন্য কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম এক কাউন্সিলর থেকে নিয়ে অর্থায়ন করে বলে জানান আয়োজক ও কুবির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জান্নাতুল ইভা। এই বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে সকল ধরনের অনুষ্ঠান না করার নির্দেশ দেন। পরে প্রক্টরের সাথে কথা বলে খিচুড়ি ভোজের আয়োজনটি অব্যাহত রাখে
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ৭টায় মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান ভোজে আসলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। এ সময় জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাকিবের নেতৃত্বে পুলিকে সুপারকে ঢোকানোর জন্য চেষ্টা করলে হট্টগোল শুরু হয়। হট্টগোলের সময় মোহাম্মদ সাকিব হুসাইনের নেতৃত্বে ১ নং সংগঠক বিল্লাল হোসেন দৈনিক কালবেলার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আবু শামকে ধাক্কা দেন। দুই পক্ষের হট্টগোলে পুলিশ সুপার কিছুক্ষণ মূল ফটকে অপেক্ষা করেন। পরবর্তীতে ফিরে যান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসা হয়নি। তাই আজকে এক জায়গা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম।
তবে সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, আমরা উনাকে ইনভাইট করেছিলাম। কিন্তু উনি যে আসবে বিষয়টি বিকেল পর্যন্ত নিশ্চিত ছিল না। স্যারের ব্যস্ততার কারণে উনি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটু আলোচনা করতে এসেছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত মো. হান্নান রহিম খিচুড়ি ভোজ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, যেখানে আন্দোলনে আহতরা এখনো হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে, দাউদকান্দিতে আজকেও একজন মারা গেছে; সেখানে খিচুড়িভোজ, নাচ-গান এসব তো একপ্রকার তাদের প্রতি মশকরা করার মতো। আহত অনেকেই চাচ্ছে তাদেরকে যেন যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থাটা অন্তত করে দেওয়া হয়। এমন একটা সিচুয়েশনে এরকম একটা আয়োজনের কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। আর সেই আয়োজনে এসেছেন পুলিশ সুপার। তাই আমরা ঢুকতে দেইনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি টাকার যে যোগান সেটা একজন সাবেক কাউন্সিলর থেকে আসছে। তাছাড়া কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল অনেকটা ইচ্ছাকৃতভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করার জন্য আন্দোলনের এই পর্যায়ে এমন একটি আয়োজনের অর্থায়ন করেছে। তাই তাকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।
সার্বিক বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, পুলিশ সুপার যে আসবেন আমরা জানি না, আমাদের কাউকে জানানোও হয়নি। তাকে যে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে সেটাও আমাদেরকে জানানো হয়নি।