সমতট ডেস্ক।। তৈরি করা রসমালাইয়ে পড়ে আছে মশা-মাছি; তেলাপোকা পড়ে আছে শিরায়। পচা মিষ্টি থেকে আসছে দুর্গন্ধ। চারদিকে ময়লা আবর্জনা। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রসমালাই ও বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন তৈরি হচ্ছেকুমিল্লার ‘মাতৃভান্ডার’ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে থাকা ‘এস এস ফুড প্রোডাক্টস’ নামের একটি কারখানা। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই বিসিক শিল্পনগরীতে স্থাপন করা কারখানাটিতে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে অভিযান চালায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআই।জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল নূর আশেকের নেতৃত্বে ভোক্তা অধিকার ও বিএসটিআই আইনে কারখানাটিকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে দেখা যায়, অনুমোদনহীন এসএস ফুড প্রোডাক্টস নামের কারখানাটি মূলত কুমিল্লার প্রসিদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী মনোহরপুর মাতৃভান্ডার কর্তৃপক্ষের। তারা শহরের মনোহরপুরে মিষ্টি বিক্রি করলেও একেবারে গোপনে বিএসটিআইকে না জানিয়ে বিসিকে কারখানা খুলে রসমালাইসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করে আসছেন। যেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কিংবা পরিচ্ছন্নতা। এসব মিষ্টিই সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় মাতৃভান্ডারে। বিক্রি করা হয় গ্রাহকের কাছে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল নূর আশেক বলেন, কারখানাটি দেশ সেরা একটি প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান মাতৃভান্ডার নামে পুরো বাংলাদেশে পরিচিত। অথচ তারা রসমালাইসহ নানান ধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করছেন একেবারে স্বাস্থ্যকর কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে। এছাড়াও কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই।
তিনি বলেন, কারখানা পরিদর্শনে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাদ্যপণ্য। মিষ্টান্নের শিরায় ভাসতে দেখা গেছে তেলাপোকাসহ নানা পোকামাকড়। ছানা কাটা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ মানার কোন বালাই নেই। তাই ভোক্তা অধিকার আইনে ৭০ হাজার ও বিএসটিআই আইনে ৮০ হাজার টাকাসহ মোট দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয় কারখানা কর্তৃপক্ষকে।
অভিযোগে কুমিল্লার মনোহরপুরের মাতৃভান্ডারে সরবরাহকারী একটি কারখানাকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
এস এস ফুড প্রোডাক্টস নামের কারখানায় তৈরিকৃত রসমালাই কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুর মাতৃভান্ডারে বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করে স্বত্বাধিকারী তমাল শাহ জানান, ভোক্তার চাহিদা পূরণ করতে বিসিকে আলাদা কারখানা খুলে মিষ্টি উৎপাদন করে আসছেন তারা। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং তেলাপোকা ও পোকামাকড় থাকার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
অভিযানে এসময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিএসটিআইয়ের ফিন্ড অফিসার ইকবাল আহাম্মদসহ পুলিশ সদস্যরা।