সমতট ডেস্ক ।।
গাজী টায়ার কারখানায় আগুন নিভানোর পরপরই কারখানার ভেতরে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সোমবার রাতে কারখানার মূল্যবান মেশিন ও অন্যান্য সামগ্রী দুর্বৃত্তরা খুলে নিয়ে যায়। এমনকি ভোরের আগেই শতাধিক মানুষ পোড়া জিনিসপত্র নিয়ে সরে পড়ে।
যৌথ বাহিনী খবর পাওয়ার পর দ্রুত কারখানাটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। বর্তমানে সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশ কারখানাটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। তবে আগুন নেভানোর সময়ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। বিজিবি সদস্যরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে লুটপাট ঠেকানোর চেষ্টা করেন।
ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে পানি ছিটাতে দেখা যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ভবনের বিভিন্ন তলায় পানি ছিটিয়ে তারা কাজ শেষ করেন।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক জানান, তারা ছয়তলা ভবনের ছাদে পৌঁছেছিলেন, কিন্তু সেখানে হতাহতের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পোড়া কারখানার তামা ও অন্যান্য ধাতু নিয়ে যাচ্ছে কিছু লোকজন, যা ভবনটির ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাকে আরও খারাপ করছে।
ভবনের ঝুঁকি
ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা জানান, কারখানার ৪, ৫ ও ৬ তলা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় এই তলাগুলো ধসে পড়তে পারে। পোড়া ভবনের ছাদ থেকে লোহা, ইট, এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী ভেঙে পড়ছে।
সকালে ঘটনাস্থলে সিআইডির একটি তদন্ত টিম উপস্থিত হলেও, ঝুঁকির কারণে তাদের ভবনের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রচণ্ড তাপের কারণে তারা ভবনের বাইরে থেকেই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্বেগ
কিছু নিখোঁজ ব্যক্তির স্বজনেরা কারখানার সামনে অবস্থান করছেন। সোয়েব হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, তার ভাই সাত্তার হোসেন কারখানায় ছিলেন, এবং রবিবার রাত পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন চালু ছিল। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
কারখানার কর্মীরা কেউ কেউ ঘটনাস্থলে এসেছেন পরিস্থিতি দেখতে, তবে মালিক পক্ষের বা কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে সেখানে দেখা যায়নি।
লুটপাট এবং নিখোঁজদের আশঙ্কা
রোববার রাত ৮টার দিকে রূপসীতে গাজী টায়ার কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ১৭৫ জনের খোঁজ মিলছে না। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারছেন না। সোমবার সন্ধ্যায়ও টায়ার কারখানার ছয়তলা ভবন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। আতঙ্কের মধ্যেই কিছু লোক কারখানার ভেতর থেকে সরঞ্জাম লুটপাট করতে দেখা যায়। রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও কারখানার ধ্বংসস্তূপের ভেতরে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।