বাগেরহাট, ২৩ আগস্ট— মোংলা উপকূলের নদ-নদীগুলোর পানি বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করেছে। শুক্রবার সকালে বাগেরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার মতে, পূর্ণিমার জোয়ার, অতিবৃষ্টি এবং উত্তাল সমুদ্রের প্রভাবের কারণে মোংলার পশুর ও মোংলা নদীর পানি স্বাভাবিকের তুলনায় ৪ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
মোংলা উপকূলের নিম্নাঞ্চলগুলো ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে, এবং পরিস্থিতি ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। পৌর শহরের ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম জানান, “গত ২-৩ দিন ধরে পানির চাপ খুব বেশি। ফেরিঘাট সম্পূর্ণভাবে তলিয়ে গেছে, যা এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করছে।”
উপজেলার জয়মনিরঘোলের বাসিন্দা লুৎফর হাওলাদার বলেন, “পশুর নদীর পানি রাস্তায় উপচে পড়ছে, ফলে আমাদের বাড়িঘর ও চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। এই অবস্থা আমাদের জীবিকা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।”
অন্যদিকে, সুন্দরবনের অভ্যন্তরের নিম্নাঞ্চলে পানি আরো বেশি প্রবাহিত হচ্ছে, যা গোটা বনাঞ্চলকে বিপদজনক জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, “গত ৩ দিন ধরে সুন্দরবনের ভেতরে পানি বেড়েছে এবং করমজল পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তাঘাটও তলিয়ে গেছে। তবে, এখনো পর্যন্ত বনের বন্যপ্রাণীর কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।”
তিনি আরও জানান, “বনের অভ্যন্তরে মাটির উঁচু টিলাগুলো বন্যপ্রাণীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করছে, তাই বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আপাতত কম।”
এই পরিস্থিতি কতটা স্থায়ী হবে এবং এর পরবর্তী প্রভাবগুলো কী হতে পারে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং বনবিভাগ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, তবে উপকূলবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।