তৌহিদ হোসেন সরকার: কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ৬নং জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের রাজমঙ্গল কটকবাজার সাহাপুর এলাকার কৃষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে চলছে অন্যায় ও দুর্নীতি। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সেচ প্রকল্পের নিয়ম ভঙ্গ করে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি জোরপূর্বক কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকারের বিএডিসি ৫ কিউসেক সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি শতক জমির জন্য নির্ধারিত মূল্য ৬০ টাকা, কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী মো. মাসুক মিয়া যিনি ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি ও মো. নুরে আলম নামে দুই ব্যক্তি জোরপূর্বক ১০০ টাকা হারে কৃষকদের কাছ থেকে আদায় করছে। এতে কৃষকদের প্রতি শতকে ৪০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে, যা বার্ষিক ২ লাখ টাকা এবং গত ১৫ বছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকা কৃষকদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে নেওয়া হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ ও দুর্ভোগ
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানিয়েছেন, তারা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। নির্ধারিত সেচ কমিটির নিয়ম অনুসরণ না করে, এই দুই ব্যক্তি জোরপূর্বক সেচের পানি সরবরাহ করছে এবং বাধ্যতামূলকভাবে বেশি মূল্য নিচ্ছে।
এক কৃষকের ভাষ্য, “আমরা সরকারি সেচ প্রকল্পের সুবিধা নিতে চাইলেও তারা আমাদের বাধা দেয়। আমাদের কাছ থেকে জোর করে বেশি টাকা আদায় করা হয়। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু ফসলের দাম বাড়ছে না।”
সরকারি সেচ প্রকল্পের নির্দেশনার লঙ্ঘন
বিএডিসির নির্ধারিত মূল্যের বাইরে গিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা সরকারি নিয়মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিএডিসির নিয়ম অনুসারে, সেচ প্রকল্প পরিচালনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। অথচ এখানে স্থানীয় প্রভাবশালীরা কৃষকদের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে তাদের অর্থ লুটপাট করছে।
প্রশাসনের নীরব ভূমিকা
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কৃষকরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে অনুরোধ করেছেন, যেন দ্রুত তদন্ত করে এ ধরনের অন্যায় কার্যক্রম বন্ধ করা হয় এবং তারা নির্ধারিত মূল্যে সেচ সুবিধা পেতে পারেন।
কৃষকরা এই অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি এবং তাদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২৫ইং লিখিত আবেদন করেছেন। তারা প্রশাসন ও সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে কৃষকদের অধিকার রক্ষা করা হয়।
এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বড় ধরনের আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, কত দ্রুত প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।