সমতট ডেস্ক ।।
সোমবার অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সাক্ষাতে এ বিষয়টি আলোচিত হয়। বৈঠকের পর ড. সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে। এতদিন জাপান মূলত প্রকল্প সহায়তা দিয়ে আসছিল, তবে এবার বাজেট সহায়তার অনুরোধ জানানো হয়েছে। জাপান এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমানোর জন্য বাজেট সহায়তা প্রয়োজন। রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স এবং উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি ঋণ দেশের ডলার প্রাপ্তির প্রধান উৎস হলেও বৈদেশিক বিনিয়োগের হার খুবই কম। তাই প্রকল্প ঋণের বাইরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে বাজেট সহায়তা পাওয়া গেলে তা সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ এই সহায়তা প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন খাতে ব্যবহার করা সম্ভব।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে অন্তর্বর্তী সরকার অন্তত ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা আশা করছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। গত অর্থবছরে জাপান বাংলাদেশকে ২০৩ কোটি ৯১ লাখ ডলারের ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং ১৯১ কোটি ৮০ লাখ ডলার ছাড়ও করেছে। এ পর্যন্ত জাপানের দেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৪৩ কোটি ৬৬ লাখ ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট বিদেশি ঋণের ১৭ শতাংশ।
ড. সালেহউদ্দিন জানান, জাপান আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শুরু হওয়া মেগা প্রকল্পগুলো চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চয়তা চেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মেট্রোরেল, কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সমুদ্রবন্দর। এসব প্রকল্পের অর্থ ছাড় দ্রুত করার অনুরোধও জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ছাত্রদের জন্য জাপানে বরাদ্দ বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
জাপানের সঙ্গে আরও প্রকল্প এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান ড. সালেহউদ্দিন। কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে জাপানের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের উদ্যোগগুলো দেখে জাপান সন্তুষ্ট। ড. সালেহউদ্দিন বলেন, জাপান বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার গুরুত্ব দিয়েছে।