সমতট ডেক্স : শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কার না করলে ফের স্বৈরাচারের উদ্ভব হবে বলে মন্তব্য করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, স্বৈরাচারের উদ্ভব ঠেকাতে ভবিষ্যতের জন্য আবার আমাদের জীবন ও রক্ত দিতে হবে কিনা তা পরিষ্কার না।
শুক্রবার দুপুরে বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে অনুষ্ঠিত গণ-অভ্যুত্থান ও আকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ’ বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এজন্য আমাদের জীবন ও রক্ত দিতে হয়েছে।
বরিশাল জেলা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, মেধার প্রশ্ন না তুলে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব ছেলেমেয়েকে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বুনিয়াদি শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলকলেজ, ছাত্র-শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে আমরা এমন এক নতুন প্রজন্ম পাবো, তারা দেশের জন্য উন্নত জনশক্তি-মেধাশক্তির একটা শর্ত পূরণ করবে।
অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ বলেন, বিপ্লবের ইতিহাস দেখবেন, বিপ্লব নিজেই নিজের ছেলেদের খেয়ে ফেলে। যারা আন্দোলনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন এখন তারা নিজেদের মধ্যেই মারামারি করে। আমরা নানাদিক থেকে দাবি উত্থাপন করেছি, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সভা-সমিতি করার অধিকার ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বাস্তবক্ষেত্রে শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো সংস্কার করার বিষয়ে হাতই দেয়নি। একই অবস্থা আমাদের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের বিষয়েও প্রযোজ্য। চিকিৎসার জন্য আমাদের বিদেশে যেতে হচ্ছে।
তিনি মূল উৎপাদন শক্তি বিদ্যুৎ, যা না থাকলে কারখানা চলে না বলে মন্তব্য করে বলেন বিদ্যুতের ক্ষেত্রে অনিয়ম দেখা যাচ্ছে, আমরা যথেষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছি না। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনো কাজে আসছে না। ভারত, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে তা কোনো কাজে আসছে না। ভারতের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী। অথচ আমাদের কলকারখানা, ঘরবাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত না রাখলে উৎপাদন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ১৫-১৬ বছরে ব্যাপক হারে দেশের সম্পদ আত্মসাৎ এবং বিদেশে পাচার হয়েছে। এখন এই সরকারের উচিত সেই টাকা দেশে ফেরত আনা, যাদের কাছে জমা তা বাজেয়াপ্ত করা। তিনি বলেন নৈরাজ্য তৈরি করলে হবে না, আমাদের গভীর ধৈর্যের সাথে এ অগ্নিপরীক্ষায় পার হতে হবে। কোনো মায়া বা মোহ ৭২ এর সংবিধানের জন্য রাখা যাবে না। গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজয় শুভর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তৃতা দেন, ববির বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান উন্মেষ রায়, সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার, স্টুডেন্ট অ্যাক্টিভিস্ট সাইদুল হক নিশান, অ্যাডভোকেট তপংকর চক্রবর্তী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ দুলাল মজুমদার প্রমুখ।