সমতট ডেস্ক : আওয়ামী লীগের নেতা বা সাবেক এমপি এমনকি সমর্থক হলেও যারা ক্লিন ইমেজের এবং যাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা সহিংসতার অভিযোগ নেই, তারা জাতীয় পার্টিতে যোগ দিলে তাদেরকে দলীয় মনোনয়ন দিবেন বলে জানিয়েছেন দলটির কো-চেয়ারম্যান সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
শনিবার দুপুরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে জাতীয় পার্টির (জাপা) দলীয় কার্যালয়ে এক কর্মী সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা বা সাবেক এমপি অথবা সমর্থক কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন মামলা-মোকাদ্দমা নাই কিংবা তিনি কোন সহিংসতায় জড়িত ছিলেন না। সেই ব্যক্তিকে যদি আমরা যোগ্য প্রার্থী মনে করি তাহলে তাকেই আমরা মনোনয়ন দিব। কেন তাকে দেব না, এমন কোন প্রশ্ন শুনতে চাই না। অবশ্যই আমরা আওয়ামী লীগের সেই লোককেই মনোনয়ন দেব। কারণ আমাদের ক্যানডিডেট ক্রাইসিসকে ওভারকাম করার জন্য আমরা এটা করব।
তিনি আরো বলেন, ৩০০ আসনে আমরা প্রার্থী দেব। এখন জাতীয় পার্টির প্রার্থীর চাইতে যদি ভালো শক্তিশালী প্রার্থী পাওয়া যায়, তার যদি ক্লিন ইমেজ থাকে এবং তার বিরুদ্ধে সহিংসতার কোনো আলামত না থাকে তাহলে দেব না (মনোনয়ন) কেন অবশ্যই দেব। ফরিদপুর, গোপালগঞ্জসহ অন্যান্য জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সমর্থন রয়েছে। সেখানে যদি ক্লিন ইমেজের লোক যদি জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন তাহলে তার তাদেরকে আমরা মনোনয়ন দেব।
তিনি বলেন, তারা দেখছে বিএনপি তো এগিয়ে আছে তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে। এখন বিএনপিকে আঘাত করতে গেলে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচনে যাবে না জামায়াতে ইসলামী। এরকম একটা খোঁড়া অজুহাত খুঁজে বিএনপিকে বিপদে ফেলার জন্য চেষ্টা। এজন্য সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিএনপিকে জাপার মহাসচিব এমন কথা বলতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাপার এই কো-চেয়ারম্যান বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে যারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি এবং এ ধরনের মব ভায়োলেন্স এ নাই তাদেরকে বাঁচানোর জন্য বিএনপির একটা ভূমিকা থাকতে হবে। তা না হলে বিএনপি একা হয়ে যাবে। সামনে যদি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি না থাকে তাহলে ইসলামী ঐক্যজোট, জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাই, এনসিপি, গণধিকার পরিষদ দলগুলো থাকতে চায় আরেকদিকে থাকতে চায় বিএনপি। এখন তারা যদি বলে পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে যাব না তখন তারা যদি সরে দাঁড়ায় তাহলে বিএনপি একা হবে। তাহলে একক নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। বিএনপিকে বিপদে ফেলার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিরা কিন্তু চেষ্টা করছে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টি অনেক শক্তিধর। কিন্তু একটি মহল জাতীয় পার্টি কে নিষিদ্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হওয়ার মত এমন কোন কাজ করেনি। কারণ সারা দেশের মানুষ এখনো জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের এক জবাবে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রংপুরে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা পক্ষে ছিল। তারাও মাঠে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। আমাদেরকে যদি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনকারী হিসেবে মনে করা হয় তাহলে অন্যান্য দলের লোকজনও আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনকারী হিসেবে ইতিপূর্ব কাজ করেছে এখনো করছে তাদেরকেও খুঁজে বের করা হোক। তাহলে বুঝা যাবে কারা আসলে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়। জাতীয় পার্টি আগেও মাঠে রয়েছে, এখনো পূর্ণশক্তি দিয়ে মাঠে থাকবে বলে তিনি জানান।
এ সময় জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, মহানগর কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি লোকমান হোসেন, সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা কমিটির সদস্যসচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিমসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।