আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, লক্ষীপুর : এইচ এস সি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে গতকাল। এতে পাস করেছেন লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত হওয়া ভিক্টোরি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান। এতে ১০২ জন ছাত্র- ছাত্রীর মধ্যে ৪.১৭ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছে । সোমবার বোর্ড থেকে এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার পর ছেলের কথা মনে পড়ে কান্নায় আবেগ আপ্লুত হয় পড়েন মা নাছিমা বেগম ও বোন জান্নাতুল মাওয়া। । আজ (১৬ অক্টোবর) বুধবার সকালে ১১ টায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান তার মা নাছিমা আক্তার । এর আগে আফনানের কবরের পাশে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আফনানের মা ও বোন । ছেলে মারা যাওয়ার পর গ্রামের বাড়িতে থাকেন না তারা।
আফনানের মা বলেন, যাকে নিয়ে আনন্দ করবো সে তো আমার কাছে নেই । আমার ছেলে আদর্শিক ছেলে ছিলো। সে একজন ভালো ছাত্র ,বন্ধুদের কাছে আর্দশ বন্ধু ছিলো। তার ইচ্ছে ছিলো পাস করে বিদেশে পড়তে যাবে,ইন্জিনিয়ার হবে কিন্তু তা আর হলো না। আমি অবাক ঘটনার এতোদিন পরও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায়, তারা এখনোও আমাকে ফোনে হুমকি দিয়ে আসছে, আমি এই খুনিদের বিচার চাই। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়, আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি,
তিনি বলেন, আমি গর্বিত আমি শহীদের মা হতে পেরেছি, ঘটনার দিন সকালে সে আমার সাথে সালাম দিয়ে আন্দোলনে যায়। এই সময় তিনি বলেন, আমার পরিবারে একমাত্র আমার মেয়ে আর আমি আছি, উপার্জনের আর কোনো পথ নেই, আমার বোনের এক মেয়েকে লালন পালন করেছি, আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি যাতে একজন কে চাকরি দিয়ে আমাদের চলার মতো ব্যবস্থা করে দেন।
এই সময় শহীদ আফনানের বোন জান্নাতুল মাওয়া জানান, আমার একমাত্র আদরের ছোট ভাই আমার বন্ধুর মতো ছিল, সে আমার খেলার সাথী ছিল। আমার বাবা তিন মাস আগে মারা যায়, তখন আমি খুব কান্না করছিলাম আমার ভাই আমাকে শান্তনা দিয়ে বলেছিলো, আমি তো আছি কিন্তু আজ ও নেই, কে আমাকে সান্তনা দিবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ই আগষ্ট সকাল থেকে লক্ষ্মীপুরে আওমীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে দফায় দফায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়,এইসময় ছাত্রদের উপর প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন আওমীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন টিপু কে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।