যশোরের মনিরামপুরে ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া পাবনার মেসকাতকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার প্রেমিকা নাজমা। সে বিদেশে বসেই মেসকাতকে হত্যা করতে রিক্তা বেগমের সঙ্গে ২ লাখ টাকার চুক্তি করে। আর রিক্তা ঠিক করে ভাড়াটে কিলার যশোর শহরের শংকরপুরের শাহীন ড্রাইভারকে। এর পর শাহীন কৌশলে মেসকাতকে মনিরামপুরে এনে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর লাশ ধানক্ষেতে ফেলে চলে যায়। মেসকাত পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের নিজাম প্রামাণিকের ছেলে।
ডিবি পুলিশের অভিযানে শুক্রবার আটকের পর হত্যায় জড়িত অন্যতম আসামি সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের রিক্তা পারভীন এসব তথ্য জানায়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নাজমার বাবা সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার নৈকাটি গ্রামের নিজাম সরদারকেও আটক করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকার ও মেসকাতের মোবাইল ফোন।
শনিবার (৪ মে) ডিবি পুলিশ যশোরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওসি রূপন কুমার সরকার জানান, মেসকাত ও প্রবাসী নাজমা দু’জনই যশোরের পদ্মবিলায় ইলা অটো রাইস মিলের শ্রমিক ছিলেন। এক পর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরই মাঝে বিদেশে পাড়ি দেয় নাজমা। পরে মেসকাত নিজ এলাকায় চলে যান। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যান মেসকাতের স্ত্রী জুলেখা। পরে তিনি নাজমাকে মোবাইল ফোনে গালাগাল করেন। এসব বিষয়ে ক্ষোভ তৈরি হয় নাজমার। এর পর সে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ জন্য সে রিক্তা পারভীনের সঙ্গে চুক্তি করে। নাজমা মেসকাতকে বলে ঝাউডাঙ্গা বাজারে তার স্বর্ণ রয়েছে, সেই স্বর্ণ সাতক্ষীরার বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। এ কাজে ঠিক করা হয় রিক্তার পরকীয়া প্রেমিক শাহীন ড্রাইভারকে। শাহীন কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মেসকাতকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে লাশ মনিরামপুরে এনে ধানক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মেসকাতের ভাই এরশাদ আলী মনিরামপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তে মাঠে নামে ডিবি পুলিশ। শুক্রবার সাতক্ষীরা জেলায় অভিযান চালিয়ে ডিবির এসআই মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম মেসকাতের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রিক্তা পারভীন ও নাজমার বাবা নিজাম সরদারকে আটক করে।