বেশ কয়েকবছর ধরে ডায়াবেটিস সঙ্গী হানিফ আহমেদের। পুষ্টিবিদের পরামর্শে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মিষ্টি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন বললেই চলে। তবুও ডায়াবেটিস আর নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। শর্করার মাত্রা কিছুতেই কমছে না।
হানিফের সাহেবের মতো সমস্যায় ভুগছেন অসংখ্য ডায়াবেটিস রোগী। পুষ্টিবিদদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে কেবল খাওয়াদাওয়া নয়, জীবনযাপনের আরও কিছু বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
শরীরচর্চা না করা
দিনের বেশিরভাগ সময়েই বসে, শুয়ে কাটান? চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক সক্রিয়তার অভাব টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই সুস্থ থাকতে রোজ অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করার চেষ্টা করুন। এজন্য যে জিমে যেতে হবে, এমনটা নয়। হাঁটা, সাইকেল চালানো, যোগাসন ইত্যাদিও ভালো ব্যায়াম।
বাইরের খাবার খাওয়া
কর্মব্যস্ত দিন শেষে আর রান্না করতে ইচ্ছে হয় না অনেকের। কিংবা প্রায়ই সহকর্মী, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয়। তাই অনলাইনে অর্ডার করা খাবার কিংবা বাইরের খাবারে ভরসা রাখেন। এসব খাবারের কারণে কিন্তু রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যায়। ময়দা, সাদা চিনি, শুকনো ফল এবং গ্লুটেন-যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। এর বদলে এমন খাবার খেতে হবে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক শর্করা বেশি।
খাবার খেয়েই শুয়ে পড়া
রাতের খাবার খেয়েই শুয়ে পড়ার অভ্যাস রয়েছে? এমন অভ্যাস কিন্তু ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়ায়। চিকিৎসকদের মতে, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বাভাবিক ও সহজ একটি উপায় হলো, রাতে তাড়াতাড়ি খাবার খেয়ে নেওয়া। ৮টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া সবচেয়ে ভালো অভ্যাস।
ভাতঘুম
দুপুরে খাওয়ার পর অনেকেই কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেন। একে ভাতঘুম বলে। তবে যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি তাদের জন্য এটি একদমই নিষিদ্ধ। চিকিৎসকদের মতে, এই অভ্যাস চুপিসারে রক্তে শর্করা বাড়িয়ে তোলে। এমনকি, রাতেও শোয়ার অন্তত পক্ষে ঘণ্টাদুয়েক আগে খাবার খেতে পারলে ভালো।
ইনসুলিন নিতে ভুলে যাওয়া
দীর্ঘ দিন ধরে যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা ভারী খাবার খাওয়ার অন্তত আধঘণ্টা আগে ইনসুলিন ওষুধ বা ইঞ্জেকশন নিতেই হয়। এক দিন ভুলে গেলে বা ওষুধ বন্ধ রাখলেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
মিষ্টি খাওয়া ছাড়ার পাশাপাশি এই অভ্যাসগুলোর দিকে নজর দিন। তাহলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস।
এনএম