বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় উঠতে চলেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনে উদ্যোগ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ধারাবাহিকতায় আগামীকাল মঙ্গলবার ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে এবং বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনকে আরও দৃঢ় করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ঢাকায় সফর করেছে। এর ঠিক পরই দীর্ঘ আড়াই দশকের বিরতির পর দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০০০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ঢাকা সফরের সময় শেষবারের মতো শীর্ষ পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়েছিল। ওই সময়েও ড. ইউনূসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে রোববার রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। জাতিসংঘ অধিবেশনের পাশাপাশি বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন তিনি, যা দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বৈঠকের গুরুত্ব ও সম্ভাব্য বিষয়বস্তু
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাধারণত জাতিসংঘ অধিবেশনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন না। তাই নিউইয়র্কে ড. ইউনূসের সঙ্গে এ বৈঠকটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এটি মূলত ঢাকার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও গভীর করার সংকেত দেবে।
বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বেশ কিছু কৌশলগত এবং রাজনৈতিক বিষয়ে, তবে বিস্তারিত আলোচনা সাধারণত কর্মকর্তাদের পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের ঢাকায় সফরের সময় এসব বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
ড. ইউনূস জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন। নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, নেপাল, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিবসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও তার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে ড. ইউনূসকে কালো পতাকা প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন সংগঠনের সমর্থকরা বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সামনে আওয়ামী লীগ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যখন তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন।
এদিকে, ২৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে নাগরিক সমাবেশে ড. ইউনূসের বক্তব্য বাতিল হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।