সমতট ডেস্ক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, পশু খাদ্যকে কোনোভাবেই মৎস্য খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তিনি এই দুটিকে আলাদা করে জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দেন। সোমবার সকালে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০২৫ (খসড়া) বিষয়ক অংশীজন পরামর্শ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরও বলেন, ম্যানগ্রোভ বন ধ্বংস করে চিংড়ি চাষ না করে, পরিবেশবান্ধব উপায়ে কীভাবে ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণ করে চিংড়ি চাষ করা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি শুধুমাত্র অবৈধ জাল ধ্বংস করার পরিবর্তে জাল উৎপাদনের উপকরণ আমদানিও বন্ধ করার আহ্বান জানান।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে অনেক সময় ক্ষতিকর বিদেশি প্রজাতির মাছ দেশে প্রবেশ করছে, যা পরিবেশ ও দেশীয় মাছের জন্য বড় হুমকি। এসব মাছ একবার পরিবেশে প্রবেশ করলে দেশীয় সবকিছু গিলে ফেলে, এবং পরে তা মেরে ফেলার নির্দেশনা আসে। শুরুতেই যদি এমন মাছ আমদানি নিরুৎসাহিত করা যেত, তাহলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে মৎস্যজীবীদের সামাজিক সুরক্ষা আরও সুস্পষ্টভাবে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, মাছের ধরন অনুযায়ী মৎস্যজীবীদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে তাদের জন্য উপযুক্ত সহায়তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, মৎস্য খাতকে প্রায়শই কৃষির উপখাত মনে করা হয়, অথচ কৃষিখাতের মতো বিদ্যুৎ ছাড়, ভর্তুকি বা সরকারি প্রণোদনার ক্ষেত্রে মৎস্যখাত অবহেলিত। তিনি জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০২৫-এ এই ধরনের বৈষম্য দূর করে মৎস্যজীবীদের অধিকার ও প্রণোদনার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুর রউফের সভাপতিত্বে এই কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াওচুন শি (Jiaoqun Shi)। এছাড়াও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি এবং বাংলাদেশ ফিশ ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এফএও এর ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ড. মো: আবুল হাসনাত, এবং জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০২৫ (খসড়া) উপস্থাপন করেন কমিউনিটি বেইজড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিসারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ এর প্রকল্প পরিচালক মো: সামছু উদ্দিন।