জসীম চৌধুরী।।
কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন সড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন জেলা ট্রাফিক পুলিশ। গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে নগরের বিভিন্ন সড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করেছে ট্রাফিক পুলিশ। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও দেশ থেকে পালানোর পর নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন তারা।
ফলে, গত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর কান্দির পাড়, টমছমব্রীজ,পুলিশ লাইন মোড়,রাজাগঞ্জ, চকবাজারসহ বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
প্রায় এক সপ্তাহ পর ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা আজ তাদের কাছ থেকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছেন।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আনিসুর রহমান বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ কাজে ফিরেছে এটা নগরবাসীর জন্য স্বস্তির। গত কয়েকদিনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে দারুণ কাজ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এটি বেশিদিন চলতে পারে না। এটি তরুণ,তরুণী শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।’
সেসময় রেড ক্রিসেন্ট,ফায়ার সার্ভিস,রোভার স্কাউট, বিএনসিসি ও শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আনসার সদস্যদেরও সহায়তা করতে দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ভলেন্টিয়ার কুমিল্লা, মেহেরাব হাসান বলেন, ছাত্র অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এরপর থেকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কর্মবিরতিতে যান পুলিশ সদস্যরা। সেই থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে আসছি, নগরীর যানযট , রাস্তার বিশৃঙ্খলা থেকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে । আজ থেকে আমরা আমাদের নিজস্ব কাজে ফিরে যাবো।ট্রাফিক ভাইদের উদ্দেশ্য বলা অবৈধভাবে অর্থলেনদেন,বাইকার,অটো ড্রাইবারদের চাবি নিয়ে হয়রানি না করে মামলা দিয়ে দেন।
রোভার স্কাউটস (শিক্ষার্থী) সানজিদা বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আমরা এতদিন ট্রাফিকের অভাব সাধারণ মানুষের দুর্দশার কথা চিন্তা করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করেছি, রৌদ্রে,বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করে গেছি এতে কষ্ট আছে আনন্দও আছে। কষ্টের চেয়ে আনন্দটাই বেশি। আজ থেকে আমাদের লেখা পড়া কলেজে চলে যাব।
বাইকার চালক করিম বলেন, আমি কুমিল্লা শহরে দীর্ঘ দিন ধরে চলাচল করি ট্রাফিক পুলিশ কে ফাঁকি দিয়ে চলতে পেরেছি কিন্তু আমাদের ছাত্র সমাজ নতুন দেশ গড়ার লক্ষ্যে দায়িত্ব নিয়েছে তাদেরকে ফাঁকি দিতে পারা যায় নাই, আমি হেলমেট ক্রয় করতে বাধ্য হয়েছি তাদেরকে ধন্যবাদ।
জেলা ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) এডমিন, মো:সাইফুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়,দেশের এই পরিস্থিতির কারণে আমরা ছিলাম না।আমরা এখন যথেষ্ট স্বাচ্ছন্দ বোধ করছি। আমাদের মাঝে কোন ধরনের মনহীনতা নেই। আপামর জনসাধারণ সকল শ্রেণীর মানুষ আমাদের সাথে আজ। আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন পুলিশ নতুন করে দেশটা কে সুন্দরভাবে গড়ে তুলবো। জেলা ট্রাফিক পুলিশের ৩০জন সদস্য কুমিল্লার বিভিন্ন সড়কে সোমবার সকাল থেকে নিয়োজিত আছে।