তৌহিদ হোসেন সরকার
কুমিল্লা, ৩০ জুলাই, বুধবার।
কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে জাতীয় চিকিৎসক সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) কুমিল্লা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী আলোচনা সভা — “দ্যা রোড টু ৩৬ জুলাই”।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনডিএফ কুমিল্লা শাখার সভাপতি জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনডিএফের সেক্রেটারি জেনারেল ও বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মাহমুদ হোসেন বলেন,
“আমরা আবাবিল পাখির আগমন দেখেছি। দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। তবে আমরা জাতির ওপর বিশ্বাস হারাইনি। ইনশাআল্লাহ, আমরা ন্যায়ের ভিত্তিতে দেশ গড়তে পারব।”
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মোঃ বশির বলেন—
“জুলাই যোদ্ধারা শহীদ, এতে কোনও সন্দেহ নেই।
চিকিৎসা যেন সবার অধিকার হয়, সেটাই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।”
আন্দোলনকালীন অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আবু রায়হান বলেন,
“আহতদের চিকিৎসা পাইনি, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা এসেছে বারবার। তবে কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ ভাই সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন।
জুলাই যোদ্ধাদের কালিমা লেপনের ষড়যন্ত্র চলছে— এটি খুনি হাসিনার অপকৌশল।”
অনুষ্ঠানে কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বারবার গর্জে উঠে প্রতিবাদী স্লোগান:
“তুমি কে আমি কে — রাজাকার রাজাকার!”
“কে বলেছে কে বলেছে — স্বৈরাচার স্বৈরাচার!”
মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি হাসান আহমেদ বলেন—
“জুলাই সনদের পূর্ণ প্রকাশ এখন সময়ের দাবি।”
সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. ফজলুল হক লিটন বলেন—
“গুম-খুনের আতঙ্কে থেকেও আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পেরেছি— এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক
ডা. উম্মে কুলসুম মুনমুন বলেন “মতপার্থক্য ভুলে সবাইকে রাষ্ট্র গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
প্রধান বক্তা, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন—
“১৮ জুলাই আমি আহতদের দেখতে যেতে চাইলেও পরিস্থিতি বাধা দিয়েছে।
আহতদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি।
আমরা চাই না চাঁদাবাজি, চাই না সন্ত্রাস— আমরা চাই একটি ন্যায়ের বাংলাদেশ।
বিচার ও সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য নয়।”
ডা. মুজিবুর রহমান, কুমিল্লা বিভাগের এনডিএফ সহ-সভাপতি, বলেন—
“আজ আমরা একত্রিত হয়েছি নতুন ভোরের স্বপ্নে। জুলাই বিপ্লবের উত্তরসূরিরা ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী দিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাঃ মাহবুল ইসলাম মজুমদার, ড্যাব কুমিল্লার সভাপতি ডাঃ এম এম হাসান, সেক্রেটারি ডাঃ জাকারিয়া, অর্থপেডিক সার্জন অধ্যাপক খালেদ হাসান, ডাঃ মাসুদ হাসান, ডাঃ এম এ মান্নানসহ কুমিল্লার প্রথিতযশা চিকিৎসক, রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠান শেষে বক্তারা বলেন—
জুলাই বিপ্লবের উত্তরাধিকার রক্ষা, শহীদদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এখনই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।