, সমতট টিভি: ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর, মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা আগামী শনিবার (০৭ জুন, ২০২৫) উদযাপিত হবে। আরবি হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে এই ঈদ উদযাপিত হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের অনুপম আদর্শ অনুসরণ করে সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই ঈদে পশু কোরবানি দেন, যা ঈদুল আজহার প্রধান আনুষ্ঠানিকতা।
ঈদুল আজহা আমাদের হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসাসহ মনের পশুত্বকে পরাভূত করার শিক্ষা নিয়ে আসে, যা কোরবানির ঈদ হিসেবেও পরিচিত। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে শত ভোগান্তি সয়ে হলেও রাজধানীসহ বড় শহরের মানুষজন ইতোমধ্যে গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের কাছে ফিরতে শুরু করেছেন, ফলে রাজধানী অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে।
ঈদের আগে কোরবানির পশু কেনার পর তার পরিচর্যা করার মাধ্যমে বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে যে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়, তা রাজধানীসহ সারা দেশেই দৃশ্যমান। এখন চলছে পশুর খাদ্য, মাংস প্রস্তুতের চাটাই, গুঁড়ি, ছুরি, চাপাতিসহ কোরবানির আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কেনা ও সংগ্রহের পালা। ঈদের দিন ভোরে পরিচ্ছন্ন পোশাক পরে আতর মেখে ঈদগাহে যাবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
ঈদুল আজহায় সামর্থ্যবান মুসলিমদের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। হজরত ইবরাহিম (আ.) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাঁর বৃদ্ধ বয়সে হওয়া প্রাণপ্রিয় ছেলে হজরত ইসমাঈল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে আল্লাহর অশেষ রহমতে হজরত ইসমাঈল (আ.)-এর পরিবর্তে দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ১০ জিলহজ পশু কোরবানি করে থাকেন। ঈদের পরও আরও দুই দিন পশু কোরবানি দেওয়া যায়।
ঈদের নামাজের খুতবায় এই ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করে কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরা হবে। কোরবানির পশুর মাংস বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং ত্যাগই কোরবানির প্রকৃত শিক্ষা—এ বিষয়টি খুতবায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হবে। ঈদগাহ ও মসজিদে দুই রাকাত নামাজ শেষে সমাজ, দেশ, মুসলিম উম্মাহ তথা সারা বিশ্বের শান্তি ও কল্যাণ কামনায় দোয়া করা হবে। জামাত শেষে কোলাকুলি করে প্রকাশ করা হবে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা। ঈদগাহ থেকে বাড়ি ফিরে সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কোরবানি করবেন এবং ধর্মীয় নির্দেশনা অনুযায়ী মাংস আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও অসহায় মানুষের মধ্যে ভাগ করে দেবেন।