ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ডাকাতিয়া নদীর তীরে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফরিদগঞ্জের ৫ নম্বর গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গল্লাক বাজারের উত্তর পাশে এই টয়লেট নির্মাণের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর দাবি, শত বছরের পুরনো এই ঘাট দীর্ঘদিন ধরে নৌপথে মালামাল পরিবহন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের যাতায়াত ও ফায়ার সার্ভিসের পানি সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এখানে পাবলিক টয়লেট নির্মিত হলে নৌপথ ব্যবহারে সমস্যা হবে এবং পরিবেশ দূষণের শিকার হবে আশপাশের বসবাসকারী বেদে সম্প্রদায় ও ব্যবসায়ীরা।
২০ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কাছে এলাকাবাসী ও ঘর মালিকদের পক্ষে মো. সোহেল হোসেন ও মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা স্যানিটারি অফিসার ও স্থানীয় ভূমি অফিসেও পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ডাকাতিয়া নদীর এই ঘাট দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের মালামাল লোড-আনলোডের জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্ষার মৌসুমে নৌকা ও টলারে মালামাল পরিবহন করা হয়, আর শুষ্ক মৌসুমে ফায়ার সার্ভিসের জন্য এখান থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়। পাবলিক টয়লেট নির্মাণ হলে এসব কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, গল্লাক বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কয়েকজন ব্যক্তি গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাজাহান পাটোয়ারীর সহায়তায় ডাকাতিয়া নদীর এই গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সওদাগর বাড়ির বাসিন্দা আবিদ মিয়া বলেন, “ডাকাতিয়া নদীর পানি আমরা গোসলসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করি। এখানে পাবলিক টয়লেট হলে পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি হবে।”
এ বিষয়ে গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাজাহান পাটোয়ারীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, “এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে এই পাবলিক টয়লেট নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ করতে হবে এবং ঘাটের সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে ডাকাতিয়া নদীর দুই পাড়ের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।