আশিকুজ্জামান, ২০২৩ সালে যোগ দেন যশোরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ঐক্য-বন্ধন’র সঙ্গে। এই সংগঠনটি বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যশোরের বিভিন্ন এলাকায়। সংগঠনটির মূল লক্ষ্য হলো অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।
‘ঐক্য-বন্ধন’ বর্তমানে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণসহ নানা ধরনের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়াও বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি, ঈদে অসহায় পরিবারের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ, বাল্যবিয়ে, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারণা, এবং নারীদের ক্ষমতায়নে উঠান বৈঠকের আয়োজন করে থাকে। তাদের মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার মানুষ সরাসরি উপকৃত হয়েছে, এবং তাদের কাজের পরিধি নিজ গ্রামের গণ্ডি ছাড়িয়ে আশপাশের উপজেলাগুলোতেও পৌঁছে গেছে।
সংগঠনের চলমান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ উদ্যোগ হলো সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার প্রসার ঘটানো। তারা খাতা-কলমসহ শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে এবং শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম অনুসারে পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করে। এছাড়াও, অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের উন্নতি ও অবনতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আশিকুজ্জামান বলেন, “আমরা অধিকারবঞ্চিত শিশুদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। বর্তমানে আমাদের নিজেদের অর্থায়নে ‘ক্রিয়েটিভ স্কুল’ চালু করেছি, যেখানে বিদ্যালয়ের প্রচলিত পাঠক্রমের বাইরে বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করি। এখানে ছোট শিশুদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, সংগীতচর্চা, কুইজ প্রতিযোগিতা, আবিষ্কার নিয়ে চর্চা, হাতের লেখা শেখানো এবং ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে মানবিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধ তৈরি করা হয়।”
সংগঠনটি পরিচালনা হয় একদল স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীর দ্বারা, যাদের কোনো আলাদা ফান্ড নেই। তাদের মূল অর্থায়ন আসে শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকায় জমা করা অর্থ থেকে। এই টিফিনের টাকা জমিয়ে সংগঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা, যা সেবা ও মানবিক কার্যক্রমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
‘ঐক্য-বন্ধন’ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সৃজনশীল, দক্ষ, এবং মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যেটি সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা জাগায়।