বিদেশি দলগুলোর কাছে ভেন্যু হিসেবে মিরপুরের চেয়ে সিলেট এখন অনেক বেশি আকর্ষণীয়। সবুজে ঘেরা স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল স্বস্তির জায়গা। অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরাও এই ভেন্যুতে ২০১৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপ খেলেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের খেলা সিলেটে পেলে হয়তো খুশিই হতো তারা।
নিজেদের দলকে দেশে খেলার সুবিধা দিতে বিসিবিই চায়নি স্পোর্টিং উইকেটে সফরকারীদের চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ খেলাতে। তাই মেয়েদের সিরিজ মিরপুরে রেখে সিলেটে দেওয়া হয়েছে ছেলেদের টেস্ট ম্যাচ।
বিসিবি নারী বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, কৌশলগত কারণে এ সিদ্ধান্ত। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জেতার জন্য মিরপুরের সুবিধা কাজে লাগাতে চাচ্ছে বোর্ড। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির কথায়ও সে বার্তা রয়েছে। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে নারী দলের অধিনায়ক জানান, অস্ট্রেলিয়া দলের জন্য মিরপুরে খেলা সহজ হবে না।
ছেলেদের মতো মেয়েদের ক্রিকেটেও অস্ট্রেলিয়া সেরা। সাতবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী তারা। ২০২৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই টুর্নামেন্টের সিরিজেও খেলছে সেরার মুকুট পরে। এই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে খেলতে পারাও অভিজ্ঞতা বলে মনে করেন অধিনায়ক জ্যোতি।
তাঁর মতে, ‘আমরা সবাই জানি, আমরা দুনিয়ার সেরা দলের বিপক্ষে খেলছি। তবে আমরা আমাদের ঘরের মাঠে খেলছি। আমি আমার দলের ওপর আস্থা রাখছি। আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে যেতে হবে। সিরিজে ইতিবাচক ফলাফল আনতে হবে।’
বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপের ১৫ ম্যাচ থেকে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তম স্থানে। সমান ম্যাচ খেলে টেবিলের শীর্ষে থাকা অসিদের অর্জন ২২ পয়েন্ট। পয়েন্ট টেবিলের সেরা ছয়ে জায়গা করে নিতে হলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিততে হবে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা ইতিবাচক ফলের আশা করছি। সাম্প্রতিক অতীতে আমরা বিশ্বের সেরা অনেক দলকে হারিয়েছি। এ ছাড়া ঘরের মাঠে পাকিস্তানের সঙ্গেও ভালো খেলেছি। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেললে আশা করি ইতিবাচক ফল আনতে পারব।’
গত জুলাইয়ে ভারত নারী দলের বিপক্ষে ঐতিহাসিক ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বিশ্বকাপে একমাত্র ম্যাচ খেলা অসিদেরও মিরপুরে পরাজয়ের স্বাদ দিতে পারেন জ্যোতিরা।
অস্ট্রেলিয়ার পাঁচজন ক্রিকেটার আইপিএল খেলে এসেছেন। ফাইনাল খেলেছেন তিনজন। এই টুর্নামেন্ট খেলে বাংলাদেশের কন্ডিশন সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা পাওয়ার কথা। এ ছাড়া ২০১৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার সুবাদে মিরপুর সম্পর্কে সামান্য হলেও ধারণা আছে অ্যালিসা হিলিদের। যদিও বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের উইকেটে বিস্তর পার্থক্য থাকে।
জ্যোতির কথায়ও তা পরিষ্কার, ‘এখানের কন্ডিশনে অনেক ফারাক আছে। এখানকার কন্ডিশন সবার জন্যই চ্যালেঞ্জিং। আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা জানি, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কী করতে হবে। যদি মেয়েরা তাদের পরিকল্পনা ভালোভাবে কাজে লাগায়, তাহলে আমরা ইতিবাচক ফল পাব।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক জানান, বোলিং শক্তিতে অস্ট্রেলিয়া দলের চেয়ে এগিয়ে তারা। স্বাগতিকদের বোলিংকে শক্তিশালী মানছেন সফরকারী অধিনায়ক হিলিও, ‘তাদের স্কোয়াড অনেক সমৃদ্ধ। বিশেষ করে বোলিংয়ে ভালো, অনেক স্পিনার আছে। উপমহাদেশের বাইরে থেকে এসে স্পিনারদের মোকাবিলা করা সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ।’
ক্রেডিট: সমকাল