সমতট ডেস্ক ।। দিনমজুর আব্দুর রশিদ আন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে জীবন-মৃত্যুর মধ্যে ছটফট করছিলেন, তখনই স্ত্রী রত্না একটি সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু চিকিৎসার বিপুল খরচ মেটাতে অসহায় রত্না বাধ্য হন তার ৩ দিনের নবজাতক সন্তানকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে। এই করুণ ঘটনা কুড়িগ্রামের এক নিঃসন্তান পরিবারের কাছে ঘটে।
গত ৪ আগস্ট দিনাজপুর সদর হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের ছররা গুলিতে গুরুতর আহত হন আব্দুর রশিদ। প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেও অবস্থার অবনতি হলে ৮ আগস্ট তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তার অপারেশন করা হয়, কিন্তু চিকিৎসার খরচ যোগাতে না পেরে স্ত্রী রত্না চরম সিদ্ধান্ত নেন। ১২ আগস্ট রংপুরের এক দম্পতির কাছে সন্তান বিক্রি করেন তিনি।
রত্না বলেন,
“স্বামীর জীবন বাঁচানোর জন্য কিছু করার উপায় ছিল না। আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না, তাই তিন দিনের সন্তানকে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। আমার স্বামীকে সুস্থ করতে আরও অপারেশন লাগবে, কিন্তু আমাদের জায়গা-জমি কিছুই নেই।”
আব্দুর রশিদ বলেন,
“৪ আগস্ট স্ত্রীর প্রসবের ব্যথার সময় হাসপাতালে নিয়ে গেলে আমি গুলিবিদ্ধ হই। গ্রামবাসীর সহায়তায় আমাকে আবারও হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে অপারেশন করা হয়।”
এ ঘটনায় দিনাজপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান জানান, শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন। ৯ সেপ্টেম্বর সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ রত্না ও কয়েকজন ছাত্র আন্দোলন কর্মী শিশুটিকে ফিরিয়ে আনার জন্য কুড়িগ্রামে রওনা দিয়েছেন।