চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ।।
চট্টগ্রাম নগরী আবারও কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে চরমভাবে ব্যাহত করছে। বেশ কিছু সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে কর্মজীবীরা মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন। এ অবস্থায় যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ভারী বৃষ্টিপাতের এই পরিস্থিতি আরও অন্তত ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া পাহাড়ধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে, নগরের পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী মানুষদের সরিয়ে নিতে প্রশাসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না, যা জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় পতেঙ্গায় ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধু আজ সকালে ৩ ঘণ্টায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। নগরের বিভিন্ন এলাকায় জমে থাকা পানির উচ্চতা ক্রমাগত বাড়ছে, বিশেষ করে মোহাম্মদপুর, চকবাজার, এবং বাকলিয়ার মতো এলাকায়।
মোহাম্মদপুরে কোমর পানি জমে থাকায় দোকানপাট এবং বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে গেছে, যার ফলে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। একই অবস্থা দেখা গেছে চকবাজারের চক সুপার মার্কেট এলাকাতেও।
খুলশী বিজিএমইএ রেলওয়ে কলোনি এবং অন্যান্য নিচু এলাকাগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এবারের জলাবদ্ধতা বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ। শিশুদের নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য পরিবার।
চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে চারটি প্রকল্পের কাজ চলছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সিডিএ-র উদ্যোগে ৩৬টি খাল ঘিরে গৃহীত। কিন্তু প্রকল্পের ব্যয় বারবার বৃদ্ধি পাওয়া এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ধীরগতির কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগের অবসান কবে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে, ভারী বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে নগরীর সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। তাদের দুর্ভোগের শেষ কোথায় তা সময়ই বলে দেবে।