স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লায় কোটা আন্দোলনকারীদের ভিডিও করায় এক শিক্ষার্থীকে তুলে হলে নিয়ে বেদম মারধর করেছে ছাত্রলীগ। শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের নজরুল হলে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমান কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ওই শিক্ষার্থী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তামিম হোসেন। সে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য।
জানা গেছে, শুক্রবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে ডাকা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে যোগদেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্ররা। কুমিল্লার ধর্মপুর এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসে তারা বিক্ষোভ মিছিল করছিল। এসময় সংবাদ সংগ্রহে যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্যরাসহ জেলার সাংবাদিকরা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতির নতুন সদস্য মো. তামিম হোসেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা দিতে আসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি শাখার নজরুল হলের ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশীরা। তামিমকে ভিডিও করতে দেখে প্রথমে তার মোবাইল নিয়ে যায় হলের কয়েকজন। পরে তাকে মোবাইল দেবে দেবে বলে হলের দিকে নিয়ে যায় তারা। হলের একটি কক্ষে নিয়ে যায় কয়েকজন। এরপরে তার ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। এসময় তার মাথা, হাত, পা ও চোখসহ বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হয়।নির্যাতনের দুই ঘণ্টা পর খবরটি জানতে পারে কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। এসময় তারা তামিমকে হল থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে সাধারণ ছাত্রদের তত্ত্বাবধানে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
আহত তামিম বলেন, আমার থেকে তারা মোবাইল নিয়ে যায়। পরে আমাকে নির্যাতন করে। তারা আমাকে বিভিন্ন হুমকি দেয়। আমার পুরো শরীর অবশ হয়ে গেছে।
হলের প্রভোস্ট নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ হলে প্রবেশ করতে আমার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। পুলিশকে বলেছি অনুসন্ধান করেন। হলে যদি শিক্ষার্থীদের মারা হয় তাহলে পুলিশের রিপোর্টে না উঠে আসবে। আমরাও আইনগত বিষয় গুলো কি করা যায় করবো।
কলেজ অধ্যক্ষ আবু জাফর খান বলেন, আমি ঢাকায় আছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হলের প্রভোস্টকে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কলেজের নজরুল হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।