তৌহিদ হোসেন সরকার
সমতট ডেস্ক: কুমিল্লা মহানগরীতে যানজট দীর্ঘদিন ধরেই একটি বড় সমস্যা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কর্মস্থলে পৌঁছাতে দুর্ভোগে পড়েন, বিশেষ করে অফিস সময় ও স্কুল-কলেজ ছুটির সময় যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এই সমস্যা সমাধানে ট্রাফিক বিভাগ জনবলের অভাবের কথা জানালেও, সাম্প্রতিক সময়ে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে অটোবাইক ও ইজিবাইক চালকদের সংগঠন “অটোবাইক, ইজিবাইক, মিশুক মালিক-সমিতি”
গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৭ দিন তারা নিজেদের স্বেচ্ছাশ্রমে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে, এতে সাধারনত যাত্রী খুশি । তাদের দাবি, কুমিল্লা শহরের ৫০ হাজারেরও বেশি ছোট যানবাহন—এর মধ্যে ৩০ হাজার অটোবাইক ও ইজিবাইক এবং ২০ হাজার মিশুক—নিয়মিত চলাচল করে। কিন্তু এসব যানবাহন বৈধতা না পাওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়, যা চালকদের জীবিকা ও যাত্রীদের সুবিধা—দুটোরই ক্ষতি করছে।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শ্রমিকদের ভূমিকা
কুমিল্লার ব্যস্ততম সড়কগুলোতে গত এক সপ্তাহ ধরে এই সংগঠনের সদস্যরা নিজেরাই যানজট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছেন। তারা ট্রাফিক সংকেত মেনে চলার জন্য চালকদের সচেতন করছেন, পথচারীদের রাস্তা পারাপারে সহযোগিতা করছেন এবং যেখানে প্রয়োজন, সেখানে স্বেচ্ছায় ট্রাফিক পরিচালনার কাজ করছেন।
এক চালক বলেন, “আমরা যদি নিজেরাই শহরের ট্রাফিক শৃঙ্খলায় ভূমিকা রাখতে পারি, তাহলে প্রশাসন আমাদের বৈধতা দিক, যাতে আমরা নিয়ম মেনে চলতে পারি এবং পুলিশি হয়রানি থেকে বাঁচি।”
বৈধতার দাবি ও অর্থনৈতিক প্রভাব
অটোবাইক ও ইজিবাইক শ্রমিকরা বলছেন, যদি সরকার তাদের বৈধতা দেয়, তাহলে—
সরকার রাজস্ব পাবে – অনুমোদিত লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন ও করের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।
শৃঙ্খলিত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে – যানবাহনগুলোর নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলার নিশ্চয়তা দেওয়া গেলে ট্রাফিক জট কমবে।
চালকদের জীবিকা নিশ্চিত হবে – বৈধতা না থাকায় তারা প্রতিনিয়ত পুলিশি হয়রানির শিকার হন। বৈধতা পেলে এই সমস্যা দূর হবে।
সড়কে শৃঙ্খলা আসবে – যদি নির্দিষ্ট রুট ও সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়, তাহলে যানজট কমবে এবং দুর্ঘটনার হার কমবে।
শ্রমিক সংগঠনের নেতা জানান, “আমরা যদি নিয়ম মেনে চলার সুযোগ পাই, তাহলে কুমিল্লা শহর যানজটমুক্ত হবে, প্রশাসনের কাজ সহজ হবে, আর সরকারও বিশাল রাজস্ব পাবে।”
প্রশাসনের অবস্থান ও করণীয়
ট্রাফিক বিভাগ ও প্রশাসন এখন পর্যন্ত এই দাবির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি একটি নিয়মতান্ত্রিক নীতিমালা করে নির্দিষ্ট সংখ্যক অটোবাইক ও ইজিবাইককে বৈধতা দেওয়া যায়, তাহলে শহরের পরিবহন ব্যবস্থা আরও শৃঙ্খলিত হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুমিল্লা মহানগরীর সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন গতস্বৈরাচারি সরকার কুমিল্লা মহানগরীর অটোবাইক ইজিবাইক যান চলাচলে বৈধতা দিতে গড়িমসি করেছে বর্তমানে জুলাই২৪ বিপ্লবী সরকার সাধারন শ্রমিকের অধিকার সুনিশ্চিত করতে তাদের যান চলাচলে বৈধতা দিবে , এতে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
সাধারন পথচারী মোঃ মোশাররফ হোসাইন বলেন
এটা শ্রমিকদের অধিকার, এটা দিলে টুকেন বানিজ্য বন্ধ হবে,।
সমিতির সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আহম্মেদ বলেন টুকেন বানিজ্যের জুলুম থেকে আমাদের মুক্তি দিতে হবে না হয় আবুসাইদ মুগ্ধের রক্তের সাথে বেইমানি করা হবে।
সর্বপরি প্রশাসন ও শ্রমিক সংগঠনের আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান খোঁজা জরুরি। নতুবা, একদিকে শহরের যানজট সমস্যা চলতে থাকবে, অন্যদিকে হাজার হাজার চালক ও তাদের পরিবার অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবে।