সমতট ডেস্ক :
কুমিল্লা, ৩০ জুলাই, বুধবার —
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কুমিল্লার ১১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৬টি আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে প্রকাশিত খসড়া নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নতুন আসন বিন্যাসে জেলার পুরনো চিত্র এলোমেলো হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করছেন জনপ্রতিনিধি ও ভোটাররা। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখছেন— “এ বিন্যাস ছিল অপ্রত্যাশিত”।
ভোটের সমীকরণেও পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রশাসনিক কাঠামো, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সর্বশেষ আদমশুমারির তথ্যের ভিত্তিতেই এ খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
📍 খসড়ার গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলো হলো:
কুমিল্লা-৯: সদর দক্ষিণ উপজেলাকে যুক্ত করা হয়েছে কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম আসনের সাথে।
কুমিল্লা-১০: লাকসাম আসন ভেঙে মনোহরগঞ্জ উপজেলা যুক্ত হয়েছে নাঙ্গলকোট এর সাথে।
লালমাই উপজেলা কুমিল্লা-৯ থেকে নিয়ে যুক্ত করা হয়েছে লাকসাম এর সাথে।
কুমিল্লা-১: দাউদকান্দির সাথে পুনরায় যুক্ত হয়েছে মেঘনা উপজেলা।
কুমিল্লা-২: হোমনার সাথে যুক্ত হয়েছে তিতাস উপজেলা।
🗣️ বিএনপি নেতাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া:
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মনিরুল হক চৌধুরী বলেন—
“এটা উন্মাদের কাণ্ড। সংস্কার কমিশনের নামে উন্মাদের প্রস্তাব।
আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেব, প্রতিরোধ করব। তবুও যদি এই বিন্যাসেই নির্বাচন হয়— তিন আসন থেকেই প্রার্থী হব।”
তিনি আরও বলেন—
“ভূগোল আর ইতিহাস পড়ে নির্বাচনী এলাকা গঠন চলে না। যারা এই প্রস্তাব দিয়েছে, তারা কোনোদিন ভোট দেয়নি বা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এটা জনগণের প্রতি জুলুম।”
🗣️ বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন—
“দাউদকান্দি, তিতাস, মেঘনা, হোমনা— এ চার উপজেলার মানুষের কল্যাণের বিষয়টি মাথায় রেখেই কমিশন শেষ পর্যন্ত জনবান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে।”
🗣️ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন—
“এখনই হতাশা বা অতিউৎসাহের কিছু নেই। মনোহরগঞ্জ ও লালমাইবাসীর মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনে সংক্ষুব্ধ আবেদন করার সুযোগ আছে।”
তিনি আরও বলেন—
“আমি বিএনপির একজন কর্মী। আসন বিন্যাসে আমাদের সমস্যা নেই।
আসন যেখানেই হোক, মানুষ ধানের শীষেই ভোট দেবে।”
নতুন এই আসন বিন্যাস জনমনে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
রাজনৈতিক নেতারা আইনগত লড়াই ও জনমত গঠনের হুঁশিয়ারি দিলেও, নির্বাচন কমিশন এখনো চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেনি।
সিদ্ধান্ত বদলের সুযোগ থাকায় সবাই অপেক্ষা করছেন কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
নতুন আসন বিন্যাস জনসাধারণ ও রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য একটি সংবেদনশীল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এখন দেখার বিষয়— নির্বাচন কমিশন জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কীভাবে নেয়।