সমতট ডেস্ক।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একজন আলোচিত ও বিতর্কিত নাম—বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু। স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরত্ব তাঁকে গৌরবমণ্ডিত করেছিল, কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাঁর নাম জড়িয়ে যায় নানা অপকর্ম ও সন্ত্রাসের অভিযোগে। আজ আমরা আলোচনা করব এই কানুর বিরুদ্ধে আসা গুরুতর অভিযোগগুলো নিয়ে।
লুদিয়ারা, কুলিয়ারা, পাতড্ডা, আমজাদের বাজার, হিংগুলা—এলাকাগুলোর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন আব্দুল হাই কানু। অভিযোগ রয়েছে, এই অঞ্চলগুলোর যত সন্ত্রাসী ছিল, তাদের পেছনের মস্তিষ্ক বা গডফাদার ছিলেন তিনি।
পাতড্ডা ও আমজাদের বাজারে মাদক ব্যবসার প্রধান ডিলার হিসেবে কানুর নাম উঠে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, তাঁর হাত ধরেই মাদক ব্যবসা এলাকায় বিস্তার লাভ করে।
সবচেয়ে নিন্দনীয় অভিযোগগুলোর একটি হলো, শিশুদের হাতে কলমের পরিবর্তে অস্ত্র তুলে দেওয়া। কানুর প্রভাব এলাকায় তরুণদের মধ্যে অপরাধে জড়ানোর প্রবণতা বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ।
জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলার জন্য কানুর নির্দেশ ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মামলা ও হামলার মাধ্যমে শত শত কর্মীকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
জামায়াত ইসলামী ওয়ার্ড সভাপতি মরহুম আব্দুল হালিম মজুমদারকে প্রকাশ্যে অপমান করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগও আছে কানুর বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন, রানা, এবং সোহাগ হত্যার ঘটনায় কানুর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ গুরুতর। অভিযোগ, এসব হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে তাঁর সরাসরি পরিকল্পনা ও নির্দেশ ছিল।
কানু ও তাঁর ছেলে বিপ্লবের নেতৃত্বে পাতড্ডা বাজার থেকে জামায়াত কর্মীদের মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, চুরি, ডাকাতি, এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে কানুর জড়িত থাকার অভিযোগ বহু পুরোনো।
আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ কতটা সত্য, তা বিচারব্যবস্থা ও তদন্তের বিষয়। তবে এসব অভিযোগ তাঁর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের ওপর ছায়া ফেলেছে। মানুষ জানতে চায়, কীভাবে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এত অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হলেন?
তথ্য ও অভিযোগ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি এক বিতর্কিত চরিত্রের গল্প। চৌদ্দগ্রামের সাধারণ মানুষ আজও কানুর কর্মের বিচার চায় এবং আশা করে, সন্ত্রাসের চক্র ভেঙে শান্তি ফিরবে তাদের জীবনে।