প্রতিবেদক
স্থান: কুমিল্লা
কুমিল্লা শহরের কোতয়ালী মডেল থানাধীন দৌলতপুর এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহে একটি প্রভাবশালী ‘সিন্ডিকেট’ সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট একজন ব্যবসায়ীর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে, যার পেছনে রয়েছে জোরপূর্বক মালামাল ক্রয়ে বাধ্য করার অপচেষ্টা।
মোঃ আবু কাউছার নামের এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, তিনি ইনসাফ গার্ডেন সিটির ওকে টাওয়ার ০৮ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং গত কিছুদিন যাবত তিনি দৌলতপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করে আসছেন। অভিযুক্তরা তাকে তাদের কাছ থেকেই নির্মাণ সামগ্রী—যেমন ইট, বালি, পাথর, সিমেন্ট ইত্যাদি—ক্রয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছিল।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত ১১ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে। অভিযুক্ত মাহফুজুল হক সিলেট থেকে আসা একটি পাথরবাহী ট্রাক আটক করে এবং কাউছারকে মোবাইল ফোনে জানায়। পরে অভিযুক্ত সোহেল ও মামুন মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানায়, ভবিষ্যতে সকল নির্মাণ সামগ্রী ওই ‘সিন্ডিকেট’ থেকেই কিনতে হবে।
কাউছার অভিযোগ করেন, ঘটনার চূড়ান্ত রূপ নেয় ১৩ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে। ওই সময় তানভীর নামের একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি আবারো একটি পাথরের ট্রাক আটক করে এবং কাউছার ঘটনাস্থলে গেলে তার সঙ্গে তানভীরের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তানভীর তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে কাউছারের ডান হাতের বাহুতে আঘাত করে, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়, তবে যাওয়ার সময় কাউছারকে খুনের হুমকি দেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে তিনি কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং অভিযোগপত্রের সাথে চিকিৎসার কাগজপত্র সংযুক্ত করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে কাউছার আরও দুইজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন—হারিছ মিয়া ও আব্দুর রহিম, যারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে কোতয়ালী মডেল থানায় যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ জানায়, অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তারা আশ্বাস দেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের ‘সিন্ডিকেট’ কেবল ব্যবসায়ীদের ক্ষতিই করছে না, বরং স্থানীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকেও বাধাগ্রস্ত করছে। প্রশাসনের উচিত, দ্রুত তদন্ত করে এই সিন্ডিকেটের শিকড় উপড়ে ফেলা।