কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলের শত শত শিক্ষার্থী অংশ নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে সব মহলের ন্যায্য দাবি মেনে নিলে সংকট নিরসন হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, রোজা ও ঈদের ছুটির পর তারা বাড়ি থেকে ফিরেছেন কয়েক দিন হলো। এরই মধ্যে বাড়ি ফিরলে তাদের আর্থিক ক্ষতি হবে। অনেকের টিউশনি আছে। আগামী শুক্রবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হবে। তাদের স্বজনেরা পরীক্ষা দিতে আসবে। এই সময়ে তাদের পক্ষে হল ত্যাগ করা কোনোভাবেই সম্ভব না। এ জন্য তারা হলে থাকবেন। কোনোভাবেই তারা বাড়ি ফিরবেন না।
নাম গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা যায় না। এখানে অন্য বিষয় আছে। চলতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হওয়ার কথা রয়েছে। হলে বহিরাগতদের আগমন হতে পারে। সে কারণেই হয়তো বন্ধ রাখা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ও বহিরাগত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।
এদিকে বিকেল ৪টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ থাকলেও কিছু কিছু শিক্ষার্থী হল ছাড়লেও রয়ে গেছেন অনেকেই। যাদের একান্তই টিউশনি বা জরুরি প্রয়োজন রয়েছে সকল হলের প্রভোস্টরা মিলে তাদের হল ছাড়ার নির্দেশ শিথিল করেছেন। যাদের যাওয়ার ইচ্ছে ছিল তাদের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি বাস সরবরাহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিছু কিছু শিক্ষার্থী হলে রয়ে গেছেন। টিউশনি করে অনেক শিক্ষার্থী তাদের পরিবার চালায়। সেসব শিক্ষার্থীদের থাকতে দেওয়া হয়েছে। হলের প্রভোস্টরা মিলে সে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের বিরোধের জেরে মামলা-হামলা শুরু হলে এই সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।