যাঁকে ঘিরে স্বপ্ন সাজানো সেই মানুষটিই আজ ঘোর শত্রু। তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে হয়তো নিজেকে এঁকেছেন। আজ সেই চোখ বলবে লড়াইয়ের উত্তাপ কতটুকু। বলছিলাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও কিলিয়ান এমবাপ্পের কথা।
সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার এমবাপ্পে। যাঁর আইডল রোনালদো। সেই শৈশব থেকে সিআর সেভেনের খেলা দেখে বড় হওয়া। এর পর তাঁর মতো করে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করা। এবার সেই আইডলের সামনেই পড়তে হলো কিলিয়ানকে। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় পর্তুগাল নামবে ফ্রান্সের বিপক্ষে। যেহেতু ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনাল। তাই একদলকে তো বিদায় নিতেই হবে। এখন দেখার অপেক্ষা কে থাকেন, কে বাদ পড়েন।
রোনালদোর সঙ্গে কিলিয়ানের তুলনা চলে না। দু’জন দুই ধরনের খেলোয়াড়। ক্রিশ্চিয়ানো এখন ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে। আর কিলিয়ানের সোনালি সময়। সেদিক থেকে একজন আরেকজনের উল্টো পিঠে। যদিও অর্জনের দিক থেকে রোনালদো এগিয়ে। ব্যক্তিগত প্রাপ্তি, শিরোপা কিংবা গোলের পাল্লাও ভারী পর্তুগিজ তারকার।
এমবাপ্পেরও কম কীসে। অল্প দিনে তাঁর হাত ছুঁয়েছে সোনালি ট্রফিটা। যার জন্য রোনালদো এতটা বছর অপেক্ষা করেছেন। হয়তো বিশ্বকাপ জিতলে জাতীয় দলকে আরও আগে বিদায় বলে দিতেন তিনি। তবে এটাই তাঁর শেষ ইউরো। এর পর আর দেশের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে দেখা যাবে না তাঁকে। এমনটা নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন রোনালদো। সে জন্য পর্তুগালের হয়ে নিজের সেরাটা দিতে চাইছেন।
কিন্তু আগের মতো আর পারফর্ম করার সামর্থ্য নেই। বয়সের ভারে অনেকটাই ঝিমিয়ে গেছেন। যার প্রমাণ গত কয়েক ম্যাচেই মেলে। সর্বশেষ স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে সহজ এক পেনাল্টি মিস করে চোখের জলে বুক ভাসিয়েছিলেন রোনালদো। তার আগে পুরো ম্যাচে অসংখ্যা সুযোগ নষ্ট করেন। যদিও টাইব্রেকারে নেওয়া পেনাল্টি আর মিস হয়নি। তবে আগের ম্যাচগুলোতে ভালো করেননি বলে এই ম্যাচেও যে ভালো করবেন না, সেটাও নয়। হয়তো আজ ফ্রান্সের বিপক্ষে জ্বলে উঠবেন রোনালদো। অন্তত নিজের শেষ ম্যাচ হিসেবে ভেবে যদি সেরাটা দিয়ে লড়াই করে যান, তাহলে তো এমবাপ্পেকেই কাঁদতে হবে।
তবে কিলিয়ানও ভালো নেই। নাকের চোট নিয়ে বেশ ভুগছেন। ফ্রান্স যদিও কোয়ার্টার পর্যন্ত এসেছে। কিন্তু এমবাপ্পে পারেননি এক ম্যাচেও নায়ক হতে। তবে কি আজকের জন্য সব ম্যাজিক তুলে রেখেছেন। হতে পারে নিজের আইডলের বিপক্ষে ম্যাচ, তাই বলে পেশাদারিত্বের দিকটাই আগে দেখার কথা কিলিয়ানের। বিশ্বকাপের পর ইউরোর ট্রফিটাও চাইবেন ছুঁতে। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করতে গেলে এই ম্যাচে নিজের আইডলকে বিদায় করা ছাড়া আর কোনো পথও খোলা নেই। তাই ৯০ মিনিটের জন্য কিলিয়ানকে ভুলতে হবে রোনালদো তাঁর আইডল।