শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার, যার প্রধান উপদেষ্টা হলেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এখন তাদের সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন চার উপদেষ্টা: ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, আলী ইমাম মজুমদার, ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৬ আগস্ট বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে নতুন চার উপদেষ্টার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের শপথবাক্য পড়াবেন।
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ:
অর্থনীতির প্রখ্যাত অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ১৯৪৮ সালে নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বিএ (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন এবং বর্তমানে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সদস্য।
আলী ইমাম মজুমদার:
৭৪ বছর বয়সী সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার জোট সরকারের সময় সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কেবিনেট সচিব ছিলেন এবং বর্তমানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দীর্ঘদিন কর্মরত আলী ইমাম মজুমদার বর্তমানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান:
২০০৭-২০০৮ সালে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক পরামর্শক হিসেবে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, ইউএনডিপি সহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী:
সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ২০০৩-২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ রাইফেলসের মহাপরিচালক ছিলেন। বিডিআর বিদ্রোহের পর সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়ে ২০১০ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান।
নতুন এই চার উপদেষ্টার যোগদান রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।