ইসলামে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কনের অনুমতি নেওয়া জরুরি এবং বিয়ের আকদের সময় কনেপক্ষ থেকে ইজাব করা হলে বা প্রস্তাব দেওয়া হলে বরের ‘কবুল করলাম’ বলে তা গ্রহণ করা জরুরি।
যেকোন ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বিবাহে বাধ্য করা হতে পারে- এটা সকল বয়স, লিঙ্গ, জাতীয়তা এবং ধর্মকে অন্তর্ভুক্ত করে।
জোরপূর্বক বিবাহ হল যেখানে একজনের বা উভয়ের বিয়েতে সম্মতি নেই, অথবা একজন বা উভয়ে সম্মতি প্রদানে সক্ষম নয়, এবং বিয়েতে বাধ্য করার জন্য তাদের উপর চাপ প্রয়োগ বা নির্যাতন করা হয়। তাছাড়া, 18 বছর বয়সের আগে কাউকে বিয়ে করার জন্য কিছু করা হলেও জোরপূর্বক বিবাহ বলা হবে, যদিও সেক্ষেত্রে কোনো চাপ বা নির্যাতন করা হয়না।
যুক্তরাজ্যে জোরপূর্বক বিয়ে অবৈধ। এটি একধরনের পারিবারিক নির্যাতন এবং মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।
কাউকে বিবাহ করতে জোর করা সবসময় শারীরিক হবে এরকম নয়, তবে এটা যেভাবেই হউক তা আইনের লঙ্ঘন।
বিয়েতে অনিচ্ছা থাকলে বিয়ের আকদের আগে বা আকদের সময়ই তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা জরুরি এবং বর ও কনের অভিভাবকদেরও উচিত নয় জোরপূর্বক বিয়ে করানো বা কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করা। কারণ বিয়ের পর সংসার মূলত বর-কনেকেই করতে হয়। অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করলে তা পরবর্তীতে অনেক অশান্তির কারণ হতে পারে।
বরের কবুল বলা ছাড়া যেমন বিয়ে হয় না, মেয়ের সম্মতি ছাড়াও বিয়ে শুদ্ধ হয় না যা আমরা উপরে উল্লেখ করেছি। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার স্পষ্ট সম্মতি বা নির্দেশনা ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী নারীকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, কীভাবে অনুমতি নেবো? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার চুপ থাকাটাই অনুমতি বলে গণ্য হবে। (বুখারি; মুসলিম)
কনের সম্মতি নিয়ে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে কনের অভিভাবক যদি নিজে বা যিনি বিয়ে পড়াবেন তার মাধ্যমে প্রস্তাব দেন এবং বর ‘কবুল করলাম’ বলেন, তাহলে বিয়ে হয়ে যাবে। মুখে ‘কবুল’ বলাটাই বরের সিদ্ধান্ত ধর্তব্য হবে। মুখে কবুল বলার পর ‘অন্তরের অনিচ্ছা’ বা কোনো ধরনের ‘চাপ থাকা’র দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনটি বিষয় এমন যে, ইচ্ছাকৃত করলে ইচ্ছাকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছাকৃত বলে ধর্তব্য হয়; সেগুলো হলো, তালাক, বিয়ে এবং তালাকে রাজঈর পর স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহণ করা। (সুনানে ইবনে মাজাহ)